
উন্মোচন নিউজ ডেস্কঃ
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি জানিয়েছেন, দেশের রাজনীতির প্রথাগত হিসাব আজ অব্যবস্থাপনা হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “কোনো ভোটই এখন শুধুই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর নির্ভর করছে না। আগে আমরা দেখতাম, জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক শক্তিই ভোটের মূল নিয়ামক। কিন্তু ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফল পুরো চিত্রটাই বদলে দিয়েছে।”
রনি উল্লেখ করেন, “আজকের সময়ের রাজনীতিতে হিংসা, চাঁদাবাজি বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনা আর সম্ভব নয়। ব্যালট বাক্স ছিনতাই, হুমকি দিয়ে ভোট আদায় – এসব পদ্ধতি কার্যকর থাকবে না। প্রযুক্তি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও রোবটিক শক্তির প্রতিযোগিতায় মানুষ আরও সচেতন হয়ে উঠেছে। ফলে পুরনো কৌশল আর প্রভাব ফেলতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে রাজনৈতিক প্রচারণায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে সবচেয়ে সক্রিয় দুটি সংগঠন আছে। প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামী এবং অপ্রকাশ্যে হিজবুত তাহরীর। এরা নিজেদের পন্থা অনুযায়ী রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।”
রনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, “আমি যে বিল্ডিংয়ে থাকি, সেখানে একজন দীর্ঘদিনের বিএনপি সমর্থক হঠাৎই শিবিরের সমর্থক হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া আমার নির্বাচনী এলাকার একজন কট্টর আওয়ামী লীগ যুবক তিন-চার মাসে দাড়ি রাখছে এবং সারাদিন ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ’ বলছে। তার মানসিক পরিবর্তন ও আচরণ সম্পূর্ণভাবে নতুন রাজনৈতিক প্রভাবের পরিচায়ক।”
তিনি জানান, “এভাবে স্থানীয় উদাহরণ দেখিয়ে বোঝা যাচ্ছে, রাজনৈতিক সচেতনতা ও ব্যক্তিগত মানসিকতার পরিবর্তন ঘটছে। চরমোনাই পীর ও জামায়াত একত্র হয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। মানুষ এখন সাহসী হয়ে গেছে, আর আগের মতো হুমকি-ধমকি বা জোরপূর্বক প্রভাবিত করা সম্ভব নয়।”
রনি বলেন, “ফলে আমাদের দেশে ট্র্যাডিশনাল রাজনীতি এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যেভাবে আগে ভোট হতো, সেই প্রথা এখন কার্যকর নয়। ভবিষ্যতের নির্বাচনে গুণ্ডামি বা চাঁদাবাজি দিয়ে সাফল্য পাওয়া যাবে না। মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা ও স্বাধীনতা অনেক শক্তিশালী হয়ে গেছে।”