
অর্থনৈতিক ডেস্ক:
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নাম লেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্লেষকদের মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া এই উত্তরণ দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত—তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য হতে পারে এক ‘বড় ধাক্কা’।
কারণ, বর্তমানে যে শুল্কমুক্ত সুবিধায় বাংলাদেশি পোশাক বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে প্রবেশ করছে, তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, উত্তরণের পর আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা মিললেও এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে পোশাকে বসবে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক। যুক্তরাজ্যে শুল্ক হবে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, কানাডায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ, জাপানে ৯ শতাংশ, ভারতে ২০ শতাংশ এবং চীনে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম ইইউ ও কানাডার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করেছে। ফলে ২০২৯ সালের পর ভিয়েতনামের পোশাক ইউরোপে শুল্কমুক্ত থাকবে, অথচ বাংলাদেশের পোশাককে পড়তে হবে অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক সতর্ক করে বলেন, “সময় খুবই সীমিত। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে ইইউর সঙ্গে আলোচনায় বসা জরুরি। জিএসপি প্লাসে গেলেও সব খাত সমান সুবিধা পাবে না। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।”
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “আমাদের অন্তত ২০৩২ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রয়োজন। প্রস্তুতির জন্য এই অতিরিক্ত সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগে অবকাঠামো উন্নয়ন, খরচ কমানো এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। না হলে ২০২৯ সালের পর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পোশাক খাত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।