
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের তরুণ প্রজন্ম যদি তাদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগায়, তবে জাতির কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকবে না।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণদের সমাজসেবামূলক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১২ জন তরুণকে পুরস্কৃত করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস তরুণদের উদ্দেশে বলেন, “তোমাদের সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজ ও জাতির জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হোক। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “তারুণ্যের শক্তিই জাতির চালিকাশক্তি। তরুণরা যখন উদ্যমী ও উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারে না।”
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্ম এখন শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানসহ দেশের নানা ঐতিহাসিক মুহূর্তে তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমাদের সামনে জনস্বাস্থ্যের সংকট, শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ কিংবা পরিবেশগত বিপর্যয়ের মতো নানা চ্যালেঞ্জ আসবেই। কিন্তু হতাশ না হয়ে নিজেদের শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি, এই দায়িত্বও তরুণরাই পালন করবে।”
তিনি বলেন, “স্বেচ্ছাসেবা কেবল আর্তমানবতার কল্যাণ নয়; এটি আত্ম-উন্নয়ন, চরিত্র গঠন এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশের মাধ্যম। তরুণদের আমরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই নয়, সমাজের নীতি নির্ধারক ও পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবে দেখতে চাই।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজকের এই পুরস্কার কেবল স্বীকৃতি নয়, এটি তোমাদের জন্য উদাত্ত আহ্বান। তোমরা আরও সাহসী হও, নেতৃত্ব দাও এবং সমাজের কল্যাণে নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করো।”
তিনি আরও যোগ করেন, “একটি ক্ষুদ্র উদ্যোগ স্বাস্থ্যখাতে হাজারো শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে পারে, সামান্য প্রচেষ্টা শিক্ষার মান উন্নত করতে পারে এবং পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের সম্মিলিত উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবুজ পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এবং পুরস্কার বিজয়ী সুরাইয়া ফারহানা রেশমা বক্তব্য রাখেন।